ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা

ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা

ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা

ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা 


তায়া’লা বলেন, রাসুল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সুরা হাশর: ৭)

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, নবী করীম (সা.) বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করবে- দাড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে। (সহীহ বুখারি, হাদিস নং–৫৪৭২)
সাধারণ মুসলমানদের অনেকেই মনে করে থাকেন, দাড়ি রাখা হচ্ছে সুন্নত, অতএব দাড়ি রাখলে ভাল আর না রাখলে তেমন কোনো সমস্যা নেই। একটা সুন্নত পালন করা হলো না, এই আর কি!
আসলে এটা সম্পূর্ণই একটি ভুল ধারণা। দাড়ি রাখা কোনো অর্থে সুন্নত আর কোনো অর্থে ফরজ বা ওয়াজিব আগে সেটা বুঝতে হবে। ইসলামে শর’ঈ বিধানের প্রধান সূত্র হচ্ছে কোরআন ও রাসুলের (সা.) সুন্নাহ অর্থাৎ হাদিস।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতা’আলা যে সব বিষয়ে আদেশ দিয়েছেন ও নিষেধ করেছেন তা পালন করা আমাদের ওপর ফরজ। এবার আসুন, দাড়ি রাখা কোন অর্থে সুন্নত আর কোন অর্থে ফরজ বা ওয়াজিব সেটা জানার ও বোঝার চেষ্টা করি।
আল্লাহতা’আলা পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে আমাদেরকে আদেশ করেছেন যেন আমরা রাসুলের (সা.) নির্দেশ মেনে চলি। তাই রাসুল (সা.) যে সব বিষয়ে আমাদের আদেশ ও নিষেধ করেছেন তা মেনে চলাও আমাদের জন্য ফরজ বা ওয়াজিব। কোরআনে কারিমের আয়াতগুলো নিম্নে দেয়া হলোঃ~
‘রাসুলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরকে আহ্বানের মত গণ্য কর না। আল্লাহ তাদেরকে জানেন, যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়। অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদের স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদের গ্রাস করবে।’ (সুরা নুর: ৬৩)
‘আর তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রাসুলের, যাতে তোমাদের ওপর রহমত করা হয়।’ (সুরা আলে-ইমরান: ১৩২)
‘যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাস, তাহলে আমাকে মুহাম্মদ (সা.) অনুসরণ কর, যাতে আল্লাহও তোমাদিগকে ভালবাসেন।’ (সুরা আলে ইমরান: ৩১)
‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের নির্দেশ মান্য কর এবং শোনার পর তা থেকে বিমুখ হয়ো না।’ (সুরা আনফাল: ২০)
‘আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো কাজের আদেশ করলে কোনো ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হয়।’ (সুরা আহজাব: ৩৬)
‘বলুন, আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসুলের আনুগত্য কর। অতঃপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে তার ওপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে সে দায়ী এবং তোমাদের উপর ন্যস্ত দায়িত্বের জন্যে তোমরা দায়ী। তোমরা যদি তাঁর আনুগত্য কর, তবে সৎ পথ পাবে। রাসুলের দায়িত্ব তো কেবল সুস্পষ্টরুপে পৌঁছে দেয়া।’ (আন-নুর: ৫৪)
‘রাসুল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা।’ (সুরা হাশর: ৭)
তাহলে বোঝা গেল, শরীয়তের বিধানের দ্বিতীয় সূত্র যেহেতু সহীহ হাদিস, কাজেই সেই অর্থে দাড়ি রাখা সুন্নত। আর পবিত্র কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা রাসুল (সা.) এর আদেশ ও নিষেধ মেনে চলার জন্য সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন। কাজেই রাসুল (সা.) এর নির্দেশ মেনে চলা আমাদের জন্য ফরজ।
আরও একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন যে, রাসুল (সা.) জিবরাঈল (আ.) এর মাধ্যমে প্রাপ্ত আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নির্দেশ ব্যতিত কোনো কথা বা কাজের নির্দেশ বা নিষেধ করতেন না। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ভাল জানেন।
দাড়ি রাখা সম্পর্কে উলামাগণের কেউ বলেছেন যে, দাড়ি রাখা ফরজ। কারণ রাসুল (সা.) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নির্দেশ ব্যতিত কোনো কথা বলতেন না। আর তাই দাড়ি রাখার ব্যাপারে রাসুল (সা.) এর নির্দেশ মানে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলারই নির্দেশ।
আবার কেউ বলেছেন, দাড়ি রাখা ওয়াজিব আবার কেউ বলেছেন সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা ভাল জানেন।
পবিত্র কোরআনে সরাসরি দাড়ি রাখার কথা বলা হয়নি। তবে হারুন (আ.)- এর ঘটনায় দাড়ির কথা উল্লেখ রয়েছে। কোরআনে দাড়ি সম্পর্কিত আয়াতটি হলো– মুসা (আ.) তাঁর কওমের নিকট ফিরে এসে যখন দেখলেন তাঁর কওম গোমরা হয়ে গেছে, তখন তিনি হারুনকে (আ.) প্রশ্ন করলেন এবং হারুন (আ.) জবাবে বলেন- ‘হে আমার মায়ের ছেলে! আমার দাড়ি ধর না এবং আমার মাথার চুলও টেনো না।’ (সুরা ত্বোয়া-হা: আয়াত ৯৪)
এখানে বোঝা যাচ্ছে হারুন (আ.)- এর দাড়ি ছিল আর মুসা (আ.) তার দাড়ি ধরেছিলেন।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাড়ি রাখার আদেশ করেছেন। এখানে একটি বিষয় জেনে রাখা দরকার, দাড়ির বিধানটি শরীয়তের একটি মৌলিক ও সাধারণ বিধান। একে নিছক আরবীয় রীতি বা বিশেষ স্থান-কালের মধ্যে সীমাবদ্ধ মনে করা মারাত্মক ভ্রান্তি।
সব কিছু আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন-
‘আমি প্রত্যেক বস্তু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি, যাতে তোমরা হৃদয়ঙ্গম কর।’ (সুরা যারিয়াত: ৪৯)
‘পবিত্র তিনি যিনি জমিন থেকে উৎপন্ন উদ্ভিদকে, মানুষকে এবং যা তারা জানে না, তার প্রত্যেককে জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা ইয়াসিন: ৩৬)
‘আমি (আল্লাহ) তোমাদেরকে জোড়া জোড়া সৃষ্টি করেছি।’ (সুরা নাবা: ৮)
উপরের আয়াত তিনটি অনুযায়ী দাড়ির মাধ্যমে মানুষকে দুই ভাগে বিভক্ত করা যায়-
১) দাড়িযুক্ত মানুষ (পুরুষ) ও
২) দাড়িবিহীন মানুষ (নারী)
আল্লাহ তা’আলা বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই।’ (আর-রুম: ৩০)
এ প্রসঙ্গে শয়তানের একটা ঔদ্ধত ঘোষণাও আল্লাহতা’আলা বান্দাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, শয়তান বলল- আমি অবশ্যই আপনার বান্দাদের মধ্য থেকে নির্দিষ্ট একটি দলকে আমার দলে ভেড়াব। তাদের পথভ্রষ্ট করব, তাদের আশ্বাস দিব; তাদের চতুষ্পদ পশুদের কর্ণচ্ছেদন করতে বলব এবং তাদের আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ করব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, সে প্রকাশ্য ক্ষতির মাঝে নিমজ্জিত হবে এবং তাদের আদেশ করব, ফলে তারা আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করবে।’ (সুরা নিসা: ১১৮-১১৯)
আয়াতের এ অংশের ব্যাখ্যায় শাববীর আহমদ উসমানী (রাহ.) বলেছেন, ‘দাড়ি মুন্ডানোও এ আকৃতি পরিবর্তনের অন্তর্ভুক্ত।’ [দেখুন: তাফসিরে উসমানী (মূল) পৃষ্ঠা ১২৫; (অনুবাদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ১/৪৪৬)]
আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করা প্রসঙ্গে তাফরিরে বয়ানুল কোরআনে এসেছে, এটা ফাসেকি কাজকর্মের অন্তর্ভুক্ত। যেমন দাড়ি মুন্ডানো, শরীরে উল্কি আঁকা ইত্যাদি। (তাফসিরে বয়ানুল কুরআন ১/২/১৫৭)
বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম উবায়দুল্লাহ ইবনে আবদুল্লাহ ইবনে উতবা (রা.) বলেন, জনৈক অগ্নিপূজক আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসেছিল। তার দাড়ি মুন্ডানো ছিল ও মোচ লম্বা ছিল। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এটা কী?’ সে বলল, ‘এটা আমাদের ধর্মের নিয়ম।’ আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘কিন্তু, আমাদের দ্বীনের বিধান, আমরা মোচ কর্তন করব ও দাড়ি লম্বা রাখব।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ১৩/১১৬-১১৭, হাদিস: ২৬০১৩)
পারস্য সম্রাট কিসরা ইয়েমেনের শাসকের মাধ্যমে রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে দু’জন দূত পাঠান। এদের দাড়ি ছিল কামানো আর গোঁফ ছিল বড়। রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে তাদের এই অবয়ব এতই কুৎসিত লেগেছিল যে, তিনি মুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে জিজ্ঞাসা করেন, তোমাদের ধ্বংস হোক, এমনটি তোমাদের কে করতে বলেছে? তারা উত্তর দিল, আমাদের প্রভু কিসরা। তিনি (সা.) তখন উত্তর দেন, আমার রব, যিনি পবিত্র ও সম্মানিত- আদেশ করেছেন যেন আমি দাড়ি ছেড়ে দেই এবং গোঁফ ছোট রাখি। (ইবনে জারির আত তাবারি, ইবন সা’দ ও ইবন বিশরান কর্তৃক নথিকৃত। আলবানি (রহ.) একে হাসান বলেছেন। দেখুন আল গাযালির ফিক্বহুস সিরাহ ৩৫৯ পৃষ্ঠা)

দাড়ি রাখা যাই হোক না কেন প্রকৃত মুসলমান দাড়ি রাখবে, এটাই স্বাভাবিক। আমাদের দাড়িতে ভালো লাগুক বা না লাগুক, আমরা আল্লাহ ও রাসুলকে (সা.) ভালবেসে দাড়ি রাখব। এক মুষ্টির অতিরিক্ত অংশ কাটার সুযোগ শরীয়তে রয়েছে।
হাদিসের কিতাবে পাওয়া যায়, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) ও হযরত আবু হুরায়রা (রা.) এক মুষ্টির অতিরিক্ত অংশ কেটেছেন। আবু যুরআ (রা.) বলেন, ‘আবু হুরায়রা (রা.) তাঁর দাড়ি মুঠ করে ধরতেন। এরপর এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন।’ (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩/১১২, হাদিস : ২৫৯৯২; ২৫৯৯৯)। কিন্তু, কোনো সহীহ বর্ণনায় এক মুষ্টির ভিতরে দাড়ি কাটার কোনো অবকাশ পাওয়া যায় না।
আল্লাহতা’আলা আমাদের সত্য উপলব্ধি করে রাসুলুল্লাহের (সা.) সুন্নত ও মুসলমানদের শি’আর (বৈশিষ্ট্য) দাড়ি ইসলামের বিধান অনুসারে রাখার তাওফিক দান করুন। আমীন।

COMMENTS

BLOGGER
নাম

অনন্যা,1,অন্যরকম খবর,12,অ্যান্ড্র্য়েড,1,আন্তর্জাতিক,7,আর্কাইভ,49,ইসলাম,2,উইজেট,1,করোনা আপডেট,3,ক্রিকেট,14,খেলার খবর,22,গ্যালারী,10,চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য,16,জাতীয়,6,জানা অজানা,2,ঢালিউড,12,ফুটবল,6,ফেসবুক,7,বলিউড,4,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,6,বিনোদন,19,বিশেষ প্রতিবেদন,2,ব্লগস্পট,2,ভিডিও,3,রাজনীতি,4,রেসিপি,7,লাইফ স্টাইল,11,শিক্ষা,6,সফটওয়্যার,1,সারাদেশ,13,সেলস মার্কেটিং,1,হলিউড,1,
ltr
item
SAIDUR TECH: ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা
ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা
ইসলামে দাড়ি রাখার বিধান দলিল ভিত্তিক আলোচনা
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjm2cS0YIhUD4oKFvQQ4ViTmmG4Pq2TXqEaFsPnOiJ687hxpCW7dvT7MFlidB54U35Y_AUCvw6a0JI_-MRGp1AuNl88l8w6UVNDwS9YSKWjV9ZrGzp8yKHHRBdZgW_cGDi-RbAH1rDsqRE/s400/AR-161209455.jpgNCS_modifiedimageversion1by1exif.jpg
https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEjm2cS0YIhUD4oKFvQQ4ViTmmG4Pq2TXqEaFsPnOiJ687hxpCW7dvT7MFlidB54U35Y_AUCvw6a0JI_-MRGp1AuNl88l8w6UVNDwS9YSKWjV9ZrGzp8yKHHRBdZgW_cGDi-RbAH1rDsqRE/s72-c/AR-161209455.jpgNCS_modifiedimageversion1by1exif.jpg
SAIDUR TECH
https://saidurtech.blogspot.com/2019/07/islame-dari-rakhar-bidhan-dolil-vittik-alochona.html
https://saidurtech.blogspot.com/
https://saidurtech.blogspot.com/
https://saidurtech.blogspot.com/2019/07/islame-dari-rakhar-bidhan-dolil-vittik-alochona.html
true
4303483673528189662
UTF-8
Loaded All Posts Not found any posts VIEW ALL Readmore Reply Cancel reply Delete By HOME PAGES POSTS View All RELETED POST CATEGORY ARCHIVE SEARCH ALL POSTS Not found any post match with your request Back Home Sunday Monday Tuesday Wednesday Thursday Friday Saturday Sun Mon Tue Wed Thu Fri Sat January February March April May June July August September October November December Jan Feb Mar Apr May Jun Jul Aug Sep Oct Nov Dec just now 1 minute ago $$1$$ minutes ago 1 hour ago $$1$$ hours ago Yesterday $$1$$ days ago $$1$$ weeks ago more than 5 weeks ago Followers Follow THIS PREMIUM CONTENT IS LOCKED STEP 1: Share. STEP 2: Click the link you shared to unlock Copy All Code Select All Code All codes were copied to your clipboard Can not copy the codes / texts, please press [CTRL]+[C] (or CMD+C with Mac) to copy